Monday, May 31, 2021

দাজ্জাল

 

দাজ্জাল হবে নব-যুবক



দাজ্জালের মাথার চুল হবে খুব বেশি কোঁচকানো
🔸
দাজ্জালের একটি চোখ আঙুরের মত ফোলা থাকবে
🔹
দাজ্জাল" আব্দুল উযযা ইবনে ক্বাত্বানের মত দেখতে হবে
🔸
দাজ্জালের সামনে সূরা কাহাফ এর শুরুর দশ আয়াত পড়তে হবে
🔹
দাজ্জাল শাম ও ইরাকের মধ্যবর্তী স্থানে আবির্ভূত হবে
🔸
দাজ্জাল তার ডানে-বামে (এদিকে ওদিকে) ফিৎনা ছড়াবে
🔹
দাজ্জাল পৃথিবীতে ৪০ দিন অবস্থান করবে
🔸
আর সেই ৪০ দিনের একটি দিন এক বছরের সমান দীর্ঘ হবে, একটি দিন হবে এক মাসের সমান লম্বা, একটি দিন এক সপ্তাহের সমান হবে এবং বাকি দিনগুলো আমাদের দিনগুলোর সম পরিমান হবে!
🔹
তখন আমাদের একদিনে ৫ওয়াক্ত নামাজই থাকবে
🔸
শুধু অনুমান করে (দিন রাতের ২৪ঘন্টা হিসাবে) নামাজ পড়তে হবে!
🔹
পৃথিবীতে দাজ্জালের গতি হবে তীব্র বায়ু তারিত মেঘের ন্যায়!
🔸
দাজ্জাল দ্রুত বেগে ভ্রমণ করে অশান্তি ও বিপর্যয় ছড়াবে!
🔹
দাজ্জাল কিছু লোকের নিকট আসবে ও তাদেরকে তার দিকে আহ্বান করবে এবং তারা তার প্রতি ঈমান আনবে ও তার আদেশ পালন করবে!
🔸
দাজ্জাল আকাশকে বৃষ্টি বর্ষণ করতে বলবে, আকাশ বৃষ্টি বর্ষণ করবে। আর যমীনকে গাছপালা উদ্গত করতে বলবে, যমীন তার আদেশে তাই করবে।
🔸
তারপর দাজ্জাল অন্য লোকের নিকট যাবে ও তার দিকে আসার জন্য তাদেরকে আহ্বান করবে। কিন্তু তারা তার ডাকে সারা দেবেনা। ফলে সে তাদের নিকট থেকে ফিরে যাবে। সে সময় তারা চরম দুর্ভিক্ষে আক্রান্ত হবে, সর্বস্বান্ত হবে
🔹
দাজ্জাল প্রাচীন ধ্বংস স্তুপের নিকট দিয়ে অতিক্রম করার সময় সেটাকে সম্বোধন করে বলবে, তুই তোর গচ্ছিত রত্নভান্ডার বের করে দে। তখন সেখানকার গুপ্ত রত্নভান্ডার' মৌমাছিদের নিজ রানী মৌমাছির অনূসরণ করার মত মাটি থেকে বেড়িয়ে তার পিছন ধরবে।






🔸
দাজ্জাল এক পূর্ণ যুবককে ডেকে তাকে অস্ত্রাঘাতে দ্বিখন্ডিত করে তীর নিক্ষেপের লক্ষমাত্রার দুরত্বে নিক্ষেপ করে দেবে। তারপর তাকে ডাক দেবে, আর সে অক্ষত শরীরে এগিয়ে আসবে। দাজ্জাল এরুপ কর্মকান্ডে মগ্ন থাকবে।
🔹
ইত্যবসরে মহান আল্লাহ্ মসীহ বিন মারইয়্যাম (ঈসা আঃ) কে পৃথিবীতে পাঠাবেন।
🔸
ঈসা (আঃ) দামেস্কের পূর্বে অবস্থিত শ্বেত মিনারের উপর অবতরণ করবেন।
🔹
ঈসা (আঃ) অর্স ও জাফরান মিশ্রিত রঙের দুই বস্ত্র পরে আসবেন।
🔸
ঈসা (আঃ) দুজন ফিরিশতার ডানাতে হাত রেখে অবতরণ করবেন।
🔹
যে কাফেরই ঈসা (আঃ) এর শ্বাস প্রশ্বাসের নাগালে আসবে সে সঙ্গে সঙ্গে মারা যাবে!
🔸
ঈসা (আঃ) এর শ্বাস প্রশ্বাস' তাঁর দৃষ্টি যতদূর যাবে ততদূর পৌঁছাবে!
🔹
শেষ পর্যন্ত জেরুজালেমের 'লুদ' প্রবেশদ্বারে দাজ্জালকে ধরে ফেলবেন এবং অনতিবিলম্বে হত্যা করে দেবেন।
🔸
দাজ্জালের মৃত্যুর পরে আসবে ইয়্যাজুজ মাজুজ।
🔹
মহান আল্লাহ্ তখন ঈসা (আঃ) এর কাছে ওহী পাঠাবেন যে, আমি আমার কিছু বান্দার আবির্ভাব ঘটিয়েছি, তাদের বিরুদ্ধে লড়ার ক্ষমতা কারো নেই। সুতরাং তুমি আমার প্রিয় বান্দাদের নিয়ে তূর পর্বতে আশ্রয় নাও।
🔸
ইয়্যাজুজ মাজুজ" প্রত্যেক উচ্চ স্থান হতে দ্রুত বেগে ছুটে যাবে।
🔹
ঈসা (আঃ) ও তার সঙ্গীরা দু'আ করবেন, ফলে আল্লাহ ইয়্যাজুজ মাজুজদের ঘারে এক প্রকার সৃষ্টি করে দেবেন। যার ফলে একসঙ্গে সবাই মারা যাবে।
🔸
সেই অঞ্চল তাদের মৃতদেহ ও দুর্গন্ধে ভরে থাকবে; এক বিঘত জায়গাও খালি থাকবেনা।
🔹
ফলে ঈসা (আঃ) ও তাঁর সঙ্গীরা দু'আ করবেন, ফলে আল্লাহ্' বুখতী উটের ঘারের ন্যায় একপ্রকার বিশাল পাখি পাঠাবেন। তারা লাশগুলোকে তুলে নিয়ে আল্লাহ যেখানে চাইবেন সেখানে ফেলবেন।
🔸
তারপর যমীন আবার ফল শস্য উৎপন্ন করবে৷ অনেক বরকত হবে। লোকেরা ডালিম খেয়ে সেই ডালিমের খোসার নিচে আশ্রয় নেবে! একটি দুগ্ধবতী উটনী একটি সম্প্রদায়ের জন্য যথেষ্ট হবে, একটি গাভী একটি গোত্রের জন্য আর আর একটি দুগ্ধবতী ছাগী কয়েকটি পরিবারের জন্য যথেষ্ট হবে।
🔹
এমন সময় আল্লাহ এক প্রকার পবিত্র বাতাস পাঠাবেন, যা তাদের বগলের নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে৷ ফলে মুসলিম নর-নারী মারা যাবে।
🔸
তারপর শুধুমাত্র অসৎলোকজন বেঁচে থাকবে, যারা পৃথিবীতে গাধার মত প্রকাশ্যে লোকচক্ষুর সামনে ব্যভিচার করবে।
🔹
এদের উপরেই সংঘটিত হবে কিয়ামত (মহাপ্রলয়)
⚫
মুসলিম ২৯৩৭, তিরমিযী ২২৪০, ৪০০১, আবূ দাউদ ৪৩২১, ইবনু মাজাহ ৪০৭৫, আহমাদ ১৭১৭৭
⚫
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
🔸
দাজ্জালের সাথে থাকবে পানি ও আগুন।
🔹
বাস্তবে তার আগুনই হবে পানি আর পানিই হবে আগুন
⚫
বুখারী ৩৪৫০-৩৪৫২, ২০৭৭, মুসলিম ২৫৬০, নাসায়ী ২০৮০, ইবনু মাজাহ ২৪২০
⚫
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
🔸
দাজ্জাল মক্কা মদীনা ব্যতীত সব শহরেই প্রবেশ করবে
🔹
মক্কা ও মদীনার গিরিপথে ফিরিস্তারা পাহারা দেবেন
🔸
দাজ্জাল মদীনার নিকটস্থ বালুময় লোনা জমিতে আসবে, সেসময় মদীনা তিনবার কেঁপে উঠবে।
⚫
বুখারী ১৮৮১, ৭১২৪, মুসলিম ২৯৪৩, তিরমিযী ২২৪২
⚫
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
🔹
দাজ্জালের সাথে রুটির পাহাড় ও পানির নহর থাকবে [ বুখারী ৭১২২, মুসলিম ২৯৩৯, ইবনু মাজাহ ৪০৭৩ ]
🔸
দাজ্জালের একচোখ কানা হবে এবং তার কপালে কাফ-ফা-র (কাফের) লেখা থাকবে [ বুখারী ৭১৩১, ৭৪০৮, মুসলিম ২৯৩০, তিরমিযী ২২৪০, আবূ দাউদ ৪৩১৬]
🔹
দাজ্জাল সাথে নিয়ে আসবে জান্নাত জাহান্নামের মত কিছু। যাকে সে জান্নাত বলবে, বাস্তবে সেটাই জাহান্নাম হবে। [ বুখারী ৩৩৩৮, মুসলিম ২৯৩৬ ]
🔸
দাজ্জালের ডান চোখ কানা হবে যেন তা ভেসে ওঠা আঙুর [ বুখারী ১৩৫৫, ২৬৩৮, ৩০৫৫, মুসলিম ১৬৯, ১৭১, ২৯৩১, আহমাদ ৪৭২৯ ]
আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে দাজ্জালের ফিৎনা থেকে বাঁচার তৌফিক দিন।
আমিন।
💞💞
👉শেয়ার করে সবাইকে জানার সুযোগ করে দিন।
Read More

Friday, May 28, 2021

ছাগলের খাবার

#অনেকে জানতে চেয়েছেন ছাগলের কি খেতে দিই।


#ছাগলের প্রধান খাবার লতা পাতা গুল্ম। এবং ছাগল ছিড়ে খেতে পছন্দ করে। সব সময় লক্ষ্য করবেন এরা খাবারের মধ্যে লম্বা জিনিস গুলি আগে ধরবে। ডাল সহ গাছের পাতা।প্রোটিন যুক্ত খাবার গুলি বেছে বেছে খেতে খুব ওস্তাদ এরা।
#আমি তেমন সময় না পেলেও দিনে ২বার ওদের কিছুটা হলেও সময় দিই। আর এসময় যদি না দিই । তাহলে তার ফল হল এটার পাতলা পায়খানা ওটার ঘা হয়েছে ওটার পেট ফেপেছে , ওটা পায়ে ব্যাথা পেয়েছে, ওটার জর , বাচ্চাটা দুধ খাচ্ছেনা ! পাঠাটা সর্দিতে নাক বুক জাম হয়ে খাচ্ছেনা । এসব ঝামেলা । খেয়াল না করলে খামারের ১২ টা বেজে যাবে।

#আমি খামারে তেমন খাবার দিতে পারিনা খুব সকালে উঠে ওদের অবস্থা দেখি । ঘরে ঢুকলে খুব আনন্দ পায় ওরা। কেউ গা চেটে দেয় কেউ অভিযোগ করে। কেউ অসুস্থ থাকলে মনমরা হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। আমি কিছু করি কিনা।




#কোন ছাগীর যখন বাচ্চা প্রসবের সময় তখন কাছে চলে আসে ও মনে করে আমি ওর একমাত্র ভরসা। কষ্টের সঙ্গে সঙ্গে আমার ওর গায়ে হাত বুলিয়ে দেওয়াটা নির্ভয় দেওয়াটা সত্যিই একটা ভরসা ও শান্তির আভাস এন দেয় ওর বুকে।

#সকালে একটু দিনের আলো পরিষ্কার হলে নদির ধারে বাগানে বেড়াতে নিয়ে যায় । যা দু একটা ঝরা পাতা ওদের ভাগ্যে জোটে তা খায়। তারপর বাড়ি ফিরে ওদের জন্য রাখা পরিষ্কার পানি খায়।

এর পর কমপক্ষে তিন ইঞ্চি করে কাটা খড় পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে আগের রাত্রে ভিজিয়ে রাখা খৈল-এর সঙ্গে মিশিয়ে অল্প দানাদার ছিটিয়ে বা মিশিয়ে প্রথম খেতে দিই।

তারপর ২ ঘন্টা পর আস্ত ভুট্টা খেতে দিই পরিমাণ মত। তার ৩/৪ ঘন্টা পর কিছু বুনো ঘাস /ভুট্টা ঘাস /ভুড়ো ঘাস । মাঝে মাঝে লতা পাতা যদি সংগ্রহে পাই দিই।

সন্ধার আগে আরেকবার খড় ঐ ভাবে দিয়ে থাকি ।
আমি কোন সময় জিরো সাইজের খড় দেওয়ার পক্ষে নয়।

ছাগলের প্রধান কাজ পরজীবি মুক্ত রাখা এটা করতে পারলে আপনার খামার ভাল থাকবে। আরো সামনে লিখবো। সাথে থাকেন।
Read More

Tuesday, May 25, 2021

ইসরাইল_গঠনে_সৌদি_রাজবংশের_ভূমিকা

#সৌদিআরব_নামের_উৎস #ইহুদিরাষ্ট্র_ইসরাইল_গঠনে_সৌদি_রাজবংশের_ভূমিকা

#বাদশাহ্‌_আব্দুল_আযীয_ইবন_সৌদ


১৯৩২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ সরকারের অনুচর ও সেবাদাস আবদুল আজিজ ইবনে সৌদ ব্রিটেনের অনুমতি নিয়ে হিজাজের নাম পরিবর্তন করে নিজ বংশের নাম অনুযায়ী এই বিশাল আরব ভূখণ্ডের নাম রাখে সৌদি আরব।





রক্তপাত, গণহত্যা ও প্রতারণার মাধ্যমে ইবনে সৌদ দখল করেছিল হিজাজ। এই দেশই (বর্তমান সৌদি আরব) বিশ্বের একমাত্র দেশ যার নামকরণ করা হয়েছে দেশটির সংখ্যালঘু একটি গোত্রের নাম অনুসারে।
আবদুল আজিজ ইবনে সৌদ ছিল ‘নজদ’ নামক মরু অঞ্চলের অধিবাসী। রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য সে ওয়াহাবি সম্প্রদায়ের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়। মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির জন্য ইংরেজদের পৃষ্ঠপোষকতায় এই উগ্র মতবাদটির জন্ম দেয়া হয়েছে বলে মনে করা হয়। ব্রিটিশরা ওসমানি খেলাফত তথা অটোম্যান তুর্কি সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য ইবনে সৌদকে অনুচর হিসেবে বেছে নেয় এবং এ জন্য তাকে প্রতি মাসে ৫ হাজার পাউন্ড স্টার্লিং ভাতা দেয়ার ব্যবস্থা করে।
তুরস্ক প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত হলে ইবনে সৌদের সাহস বেড়ে যায়। ফলে সে আরব অঞ্চলের নানা অংশে সেনা অভিযান চালাতে থাকে। ক্ষমতাসীন আলে-রশিদ গোত্রকে পরাজিত করার পর সৌদের বাহিনী ১৯২৫ সালে হিজাজে অভিযান চালায়। হিজাজের পবিত্র মক্কা ও মদীনা শহরসহ বন্দর শহর জেদ্দাহ, তায়েফ ও ইয়ানবু শহরে সৌদের বাহিনী অন্ততঃ বিশ-ত্রিশ হাজার মুসলমানকে হত্যা করেছিল।




মক্কা ও মদীনার পবিত্র মাজারগুলোর অবমাননা ও ধ্বংস সাধন ছিল সৌদের জঘন্য হঠকারিতার ঐতিহাসিক সাক্ষ্য।
এরপর ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীরা তাদের আরেক অনুচর হিজাজের শরিফ হুসাইনকে পুরস্কার দেয়ার জন্য তার দুই পুত্র ফয়সল ও আবদুল্লাহকে যথাক্রমে ইরাক এবং নব-গঠিত জর্দান নামক দেশের শাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়। এ অবস্থায় ব্রিটিশরা ইবনে সৌদকে রাজার উপাধি ব্যবহারের অনুমতি দেয় এবং তার দখল-করা অঞ্চলকে ‘সৌদি আরব’ হিসেবে ঘোষণা করারও অনুমতি দেয়। অবশ্য এইসব অনুমতি ব্রিটিশরা তখনই দেয় যখন ইবনে সৌদ এই প্রতিশ্রুতি দেয় যে সে ফিলিস্তিনে অবৈধ ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরাইল প্রতিষ্ঠার কোনো বিরোধিতা করবে না।




বাদশাহ আব্দুল আজিজ কর্তৃক ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার অনুমোদন পত্র
১৯১৭ সালের দোসরা নভেম্বর ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যালফোর ফিলিস্তিনে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। ওই ঘোষণা ব্যালফোর ঘোষণা নামে ইতিহাসে খ্যাত। এ ঘোষণা দেয়ার আগে ব্রিটিশরা সৌদি রাজা আবদুল আজিজের কাছ থেকে লিখিত সম্মতিপত্র আদায় করেছিল। ওই চিঠিতে লেখা ছিল:
আমি বাদশাহ আবদুল আজিজ ইবনে আবদুর রহমান—ফয়সলের বংশধর ও সৌদের বংশধর—হাজার বার স্বীকার করছি ও জেনেশুনে বলছি যে, মহান ব্রিটিশ সরকারের প্রতিনিধি স্যার কুকাস-এর সামনে স্বীকারোক্তি করছি এই মর্মে যে, গরিব ইহুদিদেরকে বা অন্য কাউকে ব্রিটিশ সরকার যদি ‘ফিলিস্তিন’ দান করে দেন তাহলে এতে আমার কোনো ধরনের আপত্তি নেই। বস্তুত: আমি কিয়ামত পর্যন্ত ব্রিটিশ সরকারের অভিমতের বাইরে যাব না।

— নাসিরুস সাইদ প্রণীত ‘আলে সৌদের ইতিহাস
একবার (১৯৪৫ সালে) বাদশাহ আবদুল আজিজ সৌদ ইহুদিবাদী ইসরাইল গঠনের বিরুদ্ধে পত্র-পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে বসে। সঙ্গে সঙ্গে বা ততক্ষণাত ব্রিটিশ সরকার ও ইহুদিবাদীদের পক্ষে দু’জন প্রতিনিধি এসে বাদশাহ আবদুল আজিজের সঙ্গে দেখা করে এবং বাদশাহকে তার সম্পাদিত সম্মতি-পত্রটির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। তখন বাদশাহ তাদের বলেছিল:
আমি ইহুদিদের স্বার্থে কার্যত যা করে যাব তার ওপর বিশ্বাস রাখবেন। কি বলছি তার দিকে লক্ষ্য করবেন না। কারণ, এ ধরনের কথা না বললে আমি (ক্ষমতায়) টিকে থাকতে পারব না।

— নাসিরুস সাইদ লিখিত ‘আলে সৌদের ইতিহাস’, পৃ-৯৫৩
বাদশাহর এই কথা শুনে ব্রিটিশ সরকারের ও ইহুদিবাদীদের প্রতিনিধি খুশি হয়ে ফিরে যায়।
১৯১৪ সালে স্বাক্ষরিত আল-আকির চুক্তি অনুযায়ী ইবনে সৌদ তুরস্কের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ সরকারকে সম্ভাব্য সব ধরনের সাহায্য দেয়ার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ হন। আর বাহরাইন ব্রিটিশ সরকারের কর্তৃত্বে থাকবে বলেও সৌদ কথা দেয় এবং উপসাগরীয় এলাকায় ব্রিটিশ নাগরিক ও ইংরেজদের ব্যবসা বাণিজ্যের রক্ষণাবেক্ষণ করবে বলেও ওই চুক্তিতে অঙ্গীকার করে। বিনিময়ে ব্রিটিশ সরকার ইবনে সৌদকে সমর্থন দেয়ার ও যে কোনো পক্ষ থেকে তার ওপর আক্রমণ করা হলে তা প্রতিহত করবে বলে ওয়াদা দেয়।
এভাবে সে যুগে মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের প্রতীক ও শেষ ভরসাস্থল হিসেবে বিবেচিত তুর্কি খেলাফতের ধ্বংস সাধনে সৌদি রাজা আবদুল আজিজ ও ব্রিটেনের যৌথ ষড়যন্ত্রটি বাস্তবায়িত হয়েছিল। সৌদের অনুগত ওয়াহাবি সেনারা তুর্কি মুসলমানদের গুলি করে হত্যা করেছিল এবং রক্ষা করেছিল ব্রিটিশ নাগরিকদের ও তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যকে। তাই এটা স্পষ্ট যে সৌদি আরব নামক রাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র সৃষ্টিতে ব্রিটেনের ভূমিকা ছিল সবচেয়ে প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ। অথচ ইসলাম রাজতন্ত্র সমর্থন করে না বলে ইসলাম বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন।

--------------------------------------------------------------------



উল্লেখ্য, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তুর্কি খেলাফতের বিরুদ্ধে ব্রিটেন সৌদিদেরকে তথা সৌদি বংশের লোকদের ব্যবহার করে। ফলে তুর্কি সরকার ওয়াহাবিদের রাজধানী ‘দারইয়া’ শহরটি দখল করে নেয়। আর সৌদি সর্দার আমির আবদুল্লাহকে গ্রেফতার করে প্রথমে কায়রোতে ও পরে তুরস্কে পাঠিয়ে দেন মিশরের শাসক মুহাম্মাদ আলী পাশা। তুর্কি খেলাফতের সরকার আমির আবদুল্লাহকে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে। কিন্তু বিশ্বযুদ্ধে তুরস্কের অবস্থা দুর্বল হয়ে গেলে ব্রিটিশরা আবারও সৌদ গোত্রের লোকদের নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করে। ব্রিটেন ইবনে সৌদের সঙ্গে কুখ্যাত ‘দারান’ চুক্তি স্বাক্ষর করে ১৯১৫ সালে। কুয়েতের শেখ জাবির আল সাবাহ ছিল সে সময় ব্রিটিশদের আরেক দালাল। ব্রিটিশরা এই দালালের মাধ্যমে ইবনে সৌদের সঙ্গে চুক্তি করেছিল। চুক্তি অনুযায়ী ব্রিটিশ সরকার সৌদ-পরিবারকে প্রতি বছর ষাট হাজার পাউন্ড ভাতা দিতে থাকে। পরে এ ভাতা বাড়িয়ে এক লাখ পাউন্ড করা হয়। এ ছাড়া তুরস্কের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার জন্য সৌদ গোষ্ঠীকে তিন হাজার রাইফেল ও তিনটি মেশিনগান উপহার দেয় ব্রিটেন।
ব্রিটিশ সরকার আবদুল আজিজ ইবনে সৌদের ক্ষমতা গ্রহণের উতসবে পাঠিয়েছিল স্যার কুকাসকে প্রতিনিধি হিসেবে। রাজা উপাধিতে বিভূষিত করে কুকাস তাকে বলেছিল,
হে আবদুল আজিজ, আপনি শক্তিশালী ব্যক্তিত্বের অধিকারী।
উত্তরে রাজা বলেছিল, আপনারাই আমার এ ব্যক্তিত্ব সৃষ্টি করেছেন ও এ সম্মান দান করেছেন। যদি মহান ব্রিটিশ সাম্রাজ্য না থাকত তাহলে এখানে আবদুল আজিজ আল-সৌদ নামে কেউ আছে বলেই জানত না। আমি তো আপনাদের (ব্রিটিশদের) মাধ্যমেই ‘আমির আবদুল আজিজ ইবনে সৌদ’ শীর্ষক খেতাবটি অর্জন করতে পেরেছি। আমি আপনাদের এই মহানুভবতা আজীবন ভুলব না। আর আমার বিগত আচরণ ছিল আপনাদের সেবক ও ফরমানবরদার (গোলাম) হিসেবে আপনাদের ইচ্ছাগুলো বাস্তবায়ন করা।

ওই উৎসবে কুকাস ব্রিটিশ সরকারের দেয়া শাহী তামগা বা মেডেল রাজা আজিজের গলায় পরিয়ে দেয়। কুকাস বলে যায়: অচিরেই আমরা আপনাকে হিজাজ ও তার আশপাশের অঞ্চলগুলোর বাদশাহ বলেও ঘোষণা করব এবং তখন হিজাজকে ‘সৌদি সাম্রাজ্য’ বলে ঘোষণা করা হবে।
এ কথা শুনে রাজা আজিজ স্যার কুকাসের কপালে চুমু খায় ও বলে: “আল্লাহ যেন আমাদেরকে (সৌদিদেরকে) আপনাদের খেদমত (দাসত্ব) করার ও ব্রিটিশ সরকারের সেবা (গোলামি) করার তৌফিক দেন।

— মুহাম্মাদ আলী সাইদ লিখিত ‘ব্রিটিশ ও ইবনে সৌদ’, পৃ-২৬
তথ্যসূত্র
· ‘সরওয়াতুস সৌদিয়া’, পৃ-৩৯ এবং ‘ব্রিটিশ ও ইবনে সৌদ’, পৃ-২০
· নজদ ও হিজাজের ইতিহাস, পৃ-২১০
Read More

Sunday, May 23, 2021

কেন ইসরাইল এত শক্তিশালী?

কেন ইসরাইল এত শক্তিশালী?




♦️
প্রতি ৫ জোনে ৩ জন উদ্যোক্তা
♦️
নতুন স্টার্ট উপ বিনিয়োগে এ সমস্যা হলে ইসরাইল সরকার নিজেই বিনিয়োগ করে
♦️
প্রতি তিন জনে একজন কোন না কোন স্টার্ট আপ এর মালিক, জনপ্রিয় স্টার্ট আপ এন্ড ফ্রি লান্সের সাইট FIVERR( বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের হাজার হাজার ফ্রি ল্যান্সর কাজ করে সেখানে) হলো ইসরাইলের.
♦️
কম্পিউটার আন্টি Virus ইসরাইলের তৈরী
♦️
কম্পিউটার এর USB পোর্ট ও পেনড্রাইভ এর আবিস্কার ও ইসরাইলের
♦️
তাদের রয়েছে ইনোভেশন অথরিটি ও ইনোভেশন এর জন্য আলাদা বাজেট রয়েছে
♦️
IBM এর সবচে বড়ো হার্ডওয়্যার প্রস্তুত কারক দেশ হলো ইসরাইল

♦️
University গুলোতে সবচেয়ে ভালো মানের ল্যাব এর ব্যবস্থা করে দিয়েছে,যাতে তারা খুব ভালো মানের পরীক্ষা নিরিক্ষা চালিয়ে যেতে পারে


♦️
পৃথিবীর মোট নোবেল বিজয়ীদের মধ্যে একক ভাবে পুরো পৃথিবীর সকল দেশ মহাদেশ মিলে যা পেয়েছেন তার চেয়েও বেশী ইহুদিরা। তাদের সবাই অবশ্য ইসরাইলে থাকে না। তবে ইহুদি।
পৃথিবীতে ইহুদীদের সংখ্যা মাত্র ০.২%। এত নগন্য সংখ্যক লোক নিয়ে পৃথিবীকে পরোক্ষ ভাবে শাসন করে ইহুদীরা।
♦️
.ইসরাইলে প্রতি ১০০০০ জন লোকের মধ্যে ১২০ জন বিজ্ঞানী। যা বাকি পৃথিবীর মোট বিজ্ঞানীদের চেয়ে বেশী হতে পারে। ভাবা যায় ব্যাপারটা।
♦️
ফেজবুক, গুগল,ইউটিউব, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম সহ বৃহৎ সকল সোস্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ইহুদিদের। যাদের সবার একটা করে ভ্যাট বা ট্যাক্স ফ্রি অফিস ইসরাইলে।
♦️
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশীর ভাগ উচ্চ পদস্থ জ্ঞানী বা পদধারী ব্যক্তি ইহুদি। তাই মার্কিন সরকার অসহায়।
♦️
বিশ্বের সকল বৃহৎ রাস্ট্রের সেল্টার নিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় সকল প্রডাক্ট, পানীয় মার্কিটিং করে পুরো বিশ্বকে নিজের হাতের তালুতে ধরে রেখেছে।
যেমন বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সাথে ইসরায়েলের কোন সম্পর্ক নাই তাতে কি? এই এলাকায় বাজার জাত, উৎপাদন করবে ভারত। সহজেই সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে যে টুথপেষ্ট ব্যবহার করে দাঁত পরিস্কার করলেন, যে সাবান দিয়ে গোসল করলেন বা আপনার বাচ্চাকে যে লোসন দিলেন বা আপনার বউ বা মেয়ে যে স্যাম্পু ব্যবহার করলো সব ইহুদিদের পন্য।
যত মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি, ঔষধ তার ৬০-৭০% এর আবিস্কারক এই ইহুদী রা।
✅
ফেজবুক ।
✅
Google ।
✅
সকল মেইলের সাইট ।
✅
পানীয় সব কম্পানি
✅
কসমেটিকস সহ ভ্যারাইটিস পন্য ।
✅
সাবমেরিন কানেকটিভিটি ।
✅
ইন্টারনেট ।
সব তাদের নিয়ন্ত্রণে
🎀
সুতরাং কোন দেশ তাদের সমর্থন বা স্বীকৃতি দিলো কি না দিলো বা কুটনৈতিক সম্পর্ক রাখলো কি না রাখলো তাদের কিছু যায় আসে না।
পুরো বিশ্বের সব দেশ থেকে প্রতি সেকেন্ডে তারা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয় করছে এবং করবে শুধু মেধার দ্বারা।
♥️
যে দেশে গর্ভবতী মহিলাদের গণিত শেখা বাধ্যতামুলক সে দেশকে আপনি কি মনে করেন?
মায়ের পেট থেকে গণিত শিখে বের হয়ে ২০ বছর বয়সে ফেজবুক আবিষ্কার করে ওরা। আর আমরা ভুতের গল্প শিখি। পুতুল নিয়ে জামাই বউ খেলি!!
👉
আয়তনে আমাদের ঢাকা বিভাগের মতো জায়গা ওদের। বাংলাদেশের ৬ ভাগের এক ভাগ! কিন্তু ইসরাইলই পুরো বিশ্বের খাজনা নেওয়া একমাত্র জমিদার!!
🎀
তাই মেধা মেধা মেধা!!
বিজ্ঞান চর্চার কোন বিকল্প নাই!
Read More

Saturday, April 3, 2021

এস কে সুর

সেই এস কে সুরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা!

কোন্ এস কে সুর?

মনে কি পড়ে ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ১ বিলিয়ন ডলার লুটপাটের কথা? ইনি হলেন সেই সময়কার বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভির দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি গভর্ণর সিতাংশ কুমার সুর চৌধুরী! বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ চুরির সঙ্গে যারা জড়িত ছিল, এই সুর ছিল তার অন্যতম প্রধান কর্তা। মূলত তার ব্যবস্খাপনায় রিজার্ভ লুটের কাজটি সম্পন্ন করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি হিন্দু চক্র। শুরু থেকে শেষ অবধি ৭/৮ জন হিন্দু সিনিয়র অফিসাররা চুরির কাজটি এমনভাবে করেছে যে, এক জন আরেকজনকে প্রটেক্ট করেছিল। এরা বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স ডিলিং রুম থেকে ১ বিলিয়ন ডলারের পেমেন্ট অর্ডার ইস্যু করে আমেরিকার ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে পাঠায়, নির্দেশ পেয়ে সেখান থেকে টাকা চলে যায় ফিলিপাইনের ব্যাংক ঘুরে ক্যাসিনো মার্কেটে। তারপরে নিখোঁজ হয়ে যায় বাংলাদেশের জনগনের রিজার্ভ!

এই হিন্দু চোর চক্রটি (সাথে কিছু মুসলমান কর্মকর্তাও ছিল) কেবল পেমেন্ট অর্ডার ইস্যুই করেনি, গভর্নর আতিউর রহমান খবর জানার পরে তাকে পুরো বিষয়টি ধামাচাপা দিতে এরা বুদ্ধি দেয়। এদের মধ্যে অন্যতম ব্যক্তি হলো বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্ণর এস কে সুর এবং ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিটের জিএম দেবপ্রসাদ দেবনাথ। আর পুরো ঘটনার মূলে ছিল রাষ্ট্রক্ষমতার মূল ব্যক্তির পুত্র, যার কারণে ৪ বছর পার হয়ে গেলেও কোনো তদন্ত বিচার কিছু হয়নি।

আসুন চক্রটিকে চেনা যাক:

১) সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী, ডেপুটি গভর্নর, ফরেক্স রিজার্ভ বিভাগ~ এই ডেপুটি গভর্নরের দায়িত্ব ছিল রাষ্ট্রের রিজার্ভ রক্ষণাবেক্ষন ও লেনদেনের নিয়ন্ত্রণ। তার অধীনেই থাকত ফরেক্স ডিলিং রুম। এস কে সুরের এবং অধীনস্থ অফিসারদের হাতের ছাপ ও বায়োমেট্রিক্স জমা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে, যাদের হাতের ছাপ দিয়েই পাঠানো হয়েছিল ১ বিলিয়ন ডলারের পেমেন্ট অর্ডার। ফলে সহেজই অনুমেয় এই সুরের জ্ঞাতসারে বা ব্যবস্থাপনায় রিজার্ভ চুরির সকল অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে। তৎকালনীর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল পরিস্কার করেই বলেছিলেন, এরা হাতের ছাপ না দিলে শত হ্যাক করেও টাকা চুরি সম্ভব নয়।

২) রাকেশ আস্থানা~ রিজার্ভ চুরির সময় ভারতীয় এই নাগরিক বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি এডভাইজার হিসাবে কাজ করতো, যদিও তিনি কোনো আইটি এক্সপার্ট ছিলেন না। তাকে নিয়োগ করা হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিষশেষ সুপারিশে। জয় এবং রাকেশ আমেরিকাতে একই পাড়ায় বাস করতো তখন। রিজার্ভ চুরির খবর ফিলিপাইন থেকে প্রকাশ হবার পরে গভর্নর আতিউর রহমান তড়িঘড়ি করে রাকেশকে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি কনসালটেন্ট পদে নিয়োগ দেয়। এরপর রাকেশ বলা শুরু করে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সুইফট নেট হ্যাক হয়েছে। অথচ সুইফট সিইও বলছে, তাদের নেট হ্যাক হয়নি, বরং সুইফট নেটকে অসৎউদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের লোকেরাই ৩০০০ কম্পিউটারের সাথে যুক্ত করে দেয়! রাকেশ আরও বলছে ফরেক্স ডিলিং রুমের কম্পিউটারে ম্যালওয়ার ও ভাইরাসে ভর্তি, কোনো ফায়ারওয়াল ছিল না। এটা সম্পূর্ণ অবাস্তব বয়ান। কেননা এই সকল মানি ডিলিং কম্পিউটার সর্বদা সিকিউর্ড থাকে। এসব বিষয়াদি দেখার জন্যই রাকেশকে আইটি এডভাইজারের কাজটি দেয়া হয়েছিল। এরপর কনসালটেন্ট নিয়োগ পাওয়ার পরে তড়িঘড়ি করে রাকেশ নির্দেশ দেয় ব্যাংকের সকল কর্মকর্তার কাছে থাকা কম্পিউটার ও ল্যাপটপে তার দেওয়া প্যাচ ইনস্টল করতে। এই চিঠি ইস্যু করে আরেক হিন্দু প্রিন্সিপাল মেইনটেনেন্স ইঞ্জিনিয়ার পংকজ কুমার মল্লিক। তখন ব্যাংকের অনেক কর্মকর্তাই আশংকা প্রকাশ করে যে, এই প্যাচ বসিয়ে রাকেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের সব গোপন তথ্য তাদের কব্জায় নিয়ে গেছে। এমনকি এখন বিভিন্ন মেশিনে যে সব ম্যালাওয়ার পাওয়া যাচ্ছে, তা সবই কৌশলে স্খাপন করেছেন রাকেশ। ভারতীয় এই রাকেশ এডভাইজার থাকতে এবং এত কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার থাকতে ফরেক্স রুমের মেশিনে ম্যালাওয়ার ঢোকার গল্প ছিল স্রেফ অবাস্তব।

৩) দেবপ্রসাদ দেবনাথ, চুক্তিভিত্তিক জিএম, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট: এই ব্যক্তি অবসরে যাওয়ার পরে তাকে চুক্তিতে স্বপদে নিয়োজিত রাখে গভর্নর আতিউর এবং সরকার। পদত্যাগপত্রে গভর্ণর আতিউর রহমান উল্লেখ করে, চুরির খবর ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিটকে জানায়। অথচ এই ডিপার্টমেন্টের কাজ হলো চুরি বা অনিয়ম ধরা এবং টাকা উদ্ধার করা। অথচ জিএম দেবপ্রসাদ গভর্নর আতিউরকে পরামর্শ দেয়, চুরি ঘটনা গোপন রাখাতে। কিন্তু দেবপ্রসাদ কোনো কিছুই করতে পারেনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রিজার্ভ চুরির বিষয়টি গোপন না রেখে সরকারকে সাথে সাথে জানালে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট দ্রুত চাপ দিয়ে পুরো টাকাই ফেরত আনা সম্ভব ছিল। কেননা চুরি হওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের রিজার্ভ ব্যাংকিং করপোরেশনের জুপিটার শাখায় ঘুরাঘুরি করছিল ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সাথে সাথে ফিলিপাইনের সেন্ট্রাল ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করলে টাকা পেমেন্ট হতো না, অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা যেতো। দেবপ্রসাদের ইচ্ছাকৃত ঢিলেমীতে পরবর্তীতে ঐ অর্থের বড় অংশ চলে যায় দেশটির ক্যাসিনোতে। আবার ক্যাসিনোতেও সেই অর্থ ছিল ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অর্থাৎ আরো ২০ দিন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারকে অবহিত করলে শতভাগ টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হতো। উল্টো দেবপ্রসাদদের কর্মকান্ড চুরির টাকা তুলে নিতে সাহায্য করে।

৪) দেব দুলাল রায়, সিস্টেমস ম্যানেজার, আইসিটি ও টেকনিক্যাল সার্ভিস, বাংলাদেশ ব্যাংক: আইসিটি বিভাগের প্রধান এই লোক ভারতীয় এডভাইজার রাকেশের পরামর্শ অনুযায়ী রিজার্ভ চুরি করতে সকল টেকনিক্যাল সার্ভিস দেয়। সে-ই জানে কোন্ কোন্ কম্পিউটার ব্যবহার করে চুরির কাজটি সম্পন্ন যাবে, আর কিভাবে মেশিনের সেই লগ মুছে দেয়া যাবে। তাই করেছিল।

৫) দেবাশীষ চক্রবর্তী, জিএম, ফাইনান্সিয়াল স্টাবিলিটি ডিপার্টমেন্ট: এই ব্যক্তির দায়িত্ব ছিল ফরেন একচেঞ্জ মনিটর করা। রিজার্ভ চুরি করতে তার সাহায্য অবশ্যই লাগবে।

৬) শুভঙ্কর সাহা, নির্বাহী পরিচালক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ~ রিজার্ভ চুরির ৩ মাস আগে শুভঙ্কর সাহাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র নিয়োগ করা হয়। এর দু’ মাস আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাউন্টার থেকে ৫ লাখ টাকার ক্যাশ চুরি করে হাতে নাতে ধরা পড়ে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার কর্মকর্তা দীপক চন্দ্র সাহা। তখন চোর দীপককে পুলিশে না দিয়ে ছেড়ে দেয়া এই শুভঙ্কর সাহা। জানানো হয়নি গভর্নর আতিউরকে। ২ দিন পরে পত্রিকা পড়ে জানতে পারেন গভর্ণর আতিউর! এই শুভঙ্কর চুরির সময় ও আগে পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে সকল প্রেস ব্রিফিং করে থাকত। অনেকেই বলেন, রিজার্ভ চুরির খবরাদি গোপন করতে এই লোক মিডিয়া ও জনগনকে ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’ দিয়েছে!
এই সব চোরগুলাকে নিয়োগ, পদোন্নতি, এমনকি অবসরের পরেও গুরুত্বপূর্ন পদে নিয়োগ দিয়েছিল গভর্নর আতিউর রহমান। দীর্ঘদিনে রিজার্ভ লুটের পরিকল্পনার পুরো বিষয়টি স্থানীয়দের সাথে আন্তর্জাতিক মানিলন্ডারদের সাথে সমন্বয় করে রাষ্ট্রক্ষমতার প্রধান ব্যক্তির পুত্র, তার সাথে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরাও একাধিক মিটিং করে। বেছে নেয়া হয় জুয়ার স্বর্গরাজ্য ফিলিপাইনকে। আতিউর মূলত ভারতীয় লবির লোক, আর তাই সে দিল্লির প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী প্রায় অর্ধশতাধিক হিন্দু অফিসারদের বাংলাদেশ ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ রিজার্ভ, ট্রেজারী, আইসিটি, এগ্রিকালচারাল ক্রেডিট ডিপাটমেন্টে নিয়োগ ও পদায়ন করেছিল। এসব বিষয় তদারকি করার কাজটি করেনি কেউ। কার সবকিছুই হয়েছিল পরিকল্পনামাফিক। তাই গরীব দেশের রিজার্ভ লুট হয়েছে, কিন্তু টাকা উদ্ধার হয়নি, মামলার তদন্তও হয়নি, বিচার তো দূরের কথা।

সেই এস কে সুর এতদিন পরে বাটে পড়েছে ব্যাংকিং খাতের আরেক জালিয়াত পিকে হালদারের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট ও পাচারে সহায়তাকারী হিসাবে। ভালো করে তদন্ত করলে দেখা যাবে, রিজার্ভ লুটের সাথেও পি কে হালদার জড়িত!
Read More