মহানবী মুহাম্মদ (সাঃ) ১৪০০+ বছর আগে উম্মতদের শিখিয়েছেন, খাবার শেষে হাত ও আঙ্গুল চেটে খেতে, কারন এতে উপকার নিহিত, আর আজকের বিজ্ঞানও তা আবিস্কার ও প্রমান করেছে।
হাদিস : ১
ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সাঃ) বলেন, ‘তোমরা যখন খাবার গ্রহণ করবে, তখন হাত চাটা নাগাদ তোমরা হাতকে মুছবে (ধোয়া) না।’
(বুখারি : ৫২৪৫)
হাদিস : ২
রাসুল (সাঃ) বলেন, ‘তোমরা যখন খাবার গ্রহণ করো তখন আঙুল চেটে খাও। কেননা বরকত কোথায় রয়েছে তা তোমরা জানো না।’
(ইবনে মাজাহ : ১৯১৪)
এবার দেখি বিজ্ঞান কি বলে ?
আমরা খাবার মুখে দেয়ার পর চিবাই এর পর খুব সহজে গিলে ফেলি। কিন্তু অনেক্ষণ কিছু না খেয়ে থাকার পর খাদ্য গিলতে চেষ্টা করলে খাদ্যনালীতে খাবার আটকে যায়।
কেন এমন হয়? এর কারণ হলো মুখের ভেতর এক ধরণের পিচ্ছল তরল পদার্থ থাকে যা লালা নামে পরিচিত। এই লালার সাথে খাদ্য মিশে খাদ্য পিচ্ছিল হয় এবং সহজে খাদ্য নালী পার হয়ে পেটে যায়। মুখের লালা কমে গেলে বা শুকিয়ে গেলে খাদ্য আর পিচ্ছিল থাকে না ফলে খাদ্য গলায় আটকে যায়।
দিনে মানুষ অনেকবার থুতু ফেলে এই থুতুই হলো লালা যাকে সোজা বাংলায় বলে ছেপ। লালা মুখের ভেতরের কিছু বিশেষ স্থান থেকে ক্ষরিত হয়, এই স্থান গুলোকে বলে লালাগ্রন্থি। মানবদেহে তিনটি প্রধান লালাগ্রন্থির কথা বলা হয়েছে। এগুলো হ’ল: প্যারোটিড, সাবম্যান্ডিব্যুলার ও সাব-লিঙ্গুয়াল। কিন্তু এখন নতুন একজোড়া লালাগন্থির সন্ধান পাওয়া গেছে যার নাম দেয়া হয়েছে ‘টিউবারিয়াল স্যালিভারি গ্ল্যান্ড`, যা ২০২০ সালের নতুন আবিস্কার।
উন্নত বিশ্ব তথা ইউরোপের মানুষ হাত দিয়ে না খেয়ে চামুচ দিয়ে খাবার খান। তবে আফ্রিকা, মধ্য প্রাচ্য এবং এশিয়ার বেশিরভাগ মানুষ ছুরি ও চামচের পরিবর্তে হাত দিয়ে খান। আপনি হয়ত শুনে অবাক হবেন যে, হাত দিয়ে খাওয়ার উপকারিতা অনেক। কারণ, খাওয়া একটি ইন্দ্রিয়গত ও মনোযোগী প্রক্রিয়া। দৃষ্টি, গন্ধ, শব্দ, স্বাদ এবং স্পর্শ এর মত আপনার অনুভূতিগুলো ব্যবহার হয় বলে সম্পূর্ণ অভিজ্ঞতাটি পরিপূর্ণতা পায়। হাত দিয়ে খেলে শরীর, মন ও আত্মার মধ্যে সংযোগ স্থাপিত হয়। এ কারণেই পশ্চিমা দেশগুলোর অনেক রেস্টুরেন্টে হাত দিয়ে খাওয়াকে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
হাত দিয়ে খাবার খেলে বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা মাথা তুলে দাঁড়ানোর সুযোগই পায় না। আসলে হাত দিয়ে খাবার খাওয়ার সময় আমাদের হাতে থাকা বেশ কিছু উপকারি ব্যাকটেরিয়া (Normal Flora নামক) মাঝে মধ্যে শরীরে প্রবেশ করার সুযোগ পেয়ে যায়। এই ব্যাকটেরিয়াগুলি হজমের উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি মুখ, গলা এবং ইন্টেস্টাইনকে সুরক্ষিত রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
আধুনিক গবেষণা বলছে হাত দিয়ে খাওয়ার সময় আঙুলের একেবারে মাথার কাছে থাকা হাজারো নার্ভগুলি যখনই খাবারের স্পর্শ পায়, তাখনই একটা বিশেষ সিগনাল স্টমাকে এসে পৌঁছায়, খাবারে আকার, আঁশ, শক্ত না নরম ইত্যাদি তথ্যসহ। ফলে খাবারটি শরীরে প্রবেশ করার আগেই পাকস্থলী নিজের কাজ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়, রস ও এনজাইম নিঃসৃত করার জন্য। খাবারের ধরনের উপর নির্ভর করে আপনার বিপাক পরিচালিত হয় এবং সে অনুযায়ী কাজ করে, যা ভালোভাবে হজমের জন্য প্রয়োজনীয়। সুস্থ দেহ ও মনের জন্য স্বাস্থ্যকর পরিপাক প্রক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ।
আর আঙ্গুল চেটে খেলে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার পাশাপাশি বেশী পরিমানে লালা বা পাচক রস খাবারের পেছনে পাকস্থলীতে পৌঁছায়, এতে খাবার দ্রুত হজম হয় এবং এ রসের সাথে গলায় লেগে থাকা খাদ্যকনাও পাকস্থলীতে চলে যায়। কারন আঙ্গুল চাটলে, আঙ্গুলের নার্ভ মস্তিস্কে সংকেত পাঠায় আরো বেশী পরিমানে স্যালিভা বা লালা নিঃসরনের জন্য।
সকলের ধারনা বাচ্চারা সুরক্ষিত বোধ করার জন্য নিজেরাই শান্ত করার উপায় হিসাবে তাদের থাম্ব চুষে। অনেক বাচ্চার ক্ষেত্রে এটি স্পষ্টতই সত্য তবে আরও কিছু কারণ থাকতে পারে যা নির্দিষ্ট বাচ্চাদের আঙ্গুল চুষতে আকৃষ্ট করা হয়।
চীনা পেডিয়াট্রিক্স মেডিসিনের দৃষ্টিকোণ থেকে, আঙ্গুল হজম পদ্ধতির সাথে সম্পর্কিত। চীনে শিশুদের জন্য সাধারণত চিকিৎসার একটি পদ্ধতি রয়েছে, যা জিয়াও এর তুই না (Xiao Er Tui Na) নামে পরিচিত, যা শিথিলভাবে পেডিয়াট্রিক মেডিকেল ম্যাসেজ হিসাবে প্রকাশ করে। এই সিস্টেমে একটি পদক্ষেপ হল একটি বৃত্তাকার গতিতে থাম্বের (বৃদ্ধাঙ্গুলের) প্যাডটি ঘষানো বা বারবার থাম্বের রেডিয়াল (বাইরের) প্রান্তে স্ট্রোক করা। এর প্রতিটি কৌশল বাচ্চা বা ছোট বাচ্চার হজম সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। একটি বাচ্চার হজম ব্যবস্থা প্রায় ৭ বা ৮ বছর বয়স পর্যন্ত অনুন্নত এবং অপরিপক্ক হিসাবে বিবেচিত হয়, এজন্য কম বয়সী শিশুদের কোলিক, রিফ্লাক্স এবং অন্যান্য হজমের লক্ষণ প্রবণ।
সুতরাং, ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসকরা বিবেচনা করেন যে, যখন কোনও শিশু তাদের থাম্বটি প্রচুর পরিমাণে চুষে নেয়, তারা তাদের হজম সিস্টেমকে উদ্দীপনার জন্য স্বভাবজাতভাবে এটি করে, যা আসলে তাদের পাচনতন্ত্রকে স্বাস্থ্যকর এবং শক্তিশালী হতে সাহায্য করে।
মন্তব্যঃ
উপরোক্ত আলোচনার পর আর বলার কি দরকার আছে যে, হাদিসের বক্তব্যটি মানব দেহের স্রষ্টাই তাঁর প্রতিনিধির মাধ্যমে মানব জাতির কাছে ১৪০০+ বছর আগে পাঠিয়েছেন ?
Scientists discover new pair of salivary glands in centre of head.
The Function of the Salivary Glands and Why They Benefit Your Oral Health.
The Digestive Process: Digestion Begins in the Mouth.
Salivary Glands: How They Protect Your Oral Health ?
Saliva and gastrointestinal functions of taste, mastication, swallowing and digestion.
Is there a therapeutic element to thumb sucking?
Handling food with your fingers releases digestive juices and enzymes.
কোরআন ও হাদিসের বাণী গবেষনা তথ্য সব পর্ব একসাথে একজায়গায় পেতে Visit করতে পারেন :
https://www.facebook.com/groups/3653692774658521/?ref=share
অন্য মুসলিমের জানার জন্য শেয়ার বা কপি/পেষ্ট করুন, সওয়াব অর্জন করুন।